বিঞ্জান ও প্রযুক্তি

 দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবলে যুক্ত হচ্ছে বাংলাদেশ
প্রস্তাবিত ব্যয় ৩৫০ কোটি টাকা, বাস্তবায়ন ১৫ থেকে ১৮ মাসে * ইন্টারনেটে গতি বাড়বে, থাকবে না ব্যান্ডউইথ সমস্যা * ভি-স্যাটের বাণিজ্যিক ব্যবহার পুরোপুরি নিষিদ্ধ হচ্ছে
বিকল্প এবং দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপনের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ মুহূর্তে চলছে বিকল্প সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপনের গাইড লাইন তৈরির কাজ। প্রায়ই সাবমেরিন ক্যাবল কাটা পড়ার কারণে বাংলাদেশ নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবা থেকে বঞ্চিত হয়। এ রকম সময় দেশজুড়ে গ্রাহকদের যেন ভোগান্তিতে না পড়তে হয় তাই বিকল্প একটি সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেডের (বিএসসিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মনোয়ার হোসেন। এটি স্থাপনে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা ব্যয়ের সম্ভাব্য খরচ ও বাস্তবায়ন সময় ১৫ থেকে ১৮ মাস ধরা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। এছাড়াও দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবলে বাংলাদেশ সংযুক্ত হলেই ভি-স্যাটের বাণিজ্যিক ব্যবহার সরকার বন্ধ করে দেবে বলে জানিয়েছে বিটিআরসি। প্রকৌশলী মনোয়ার হোসেন জানান, অচিরেই তথ্যপ্রযুক্তির মানোন্নয়ন, বহির্বিশে¡র সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ এবং বিদ্যমান ইন্টারনেট গতি বাড়াতে বাংলাদেশ নতুন একটি সাবমেরিন ক্যাবলের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। ব্যাকআপ সুবিধা নিশ্চিত করতেই বিকল্প সাবমেরিন কেবল স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই মুহূর্তে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (বিটিআরসি) সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপনের কাজ শুরু করতে প্রয়োজনীয় গাইড লাইন নিয়ে কাজ করছে। এ গাইড লাইনগুলো সরকারি অনুমোদনের পর পুরো প্রকল্প বাস্তবায়নে ১৫ থেকে ১৮ মাস সময় প্রয়োজন হবে। এরই মধ্যে প্রস্তাবিত দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপনের জন্য বিএসসিসিএল সরকারের কাছে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা ব্যয়ের সম্ভাব্য খরচের সুপারিশও করেছে বলে তিনি জানান।
বিটিআরসি সূত্র জানায়, সিমিউইফোর সাবমেরিন ক্যাবল কনসর্টিয়ামের সদস্য বাংলাদেশ। এ কনসর্টিয়ামে ১৪টি দেশের ১৬টি পার্টির মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। সিমিউইফোর কনসর্টিয়ামের সাবমেরিন ক্যাবলের সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় বাংলাদেশের ইন্টারনেট গতি আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। সঙ্গে বহির্বিশ্বের সঙ্গে টেলিযোগাযোগ খরচটাও কমে এসেছে। তবে একটি মাত্র সাবমেরিন ক্যাবলের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় তাৎক্ষণিক কারিগরি ত্র“টির কারণে প্রায়ই বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের টেলিযোগাযাগ ব্যাহত হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে প্রকৌশলী মনোয়ার হোসেন বলেন, এ নতুন সাবমেরিন ক্যাবল দেশের বিকল্প সাবমেরিন ক্যাবল হিসেবে কাজ করবে। এ মুহূর্তে বাংলাদেশের একমাত্র সাবমেরিন কেবল সিমিউইফোর কোন কারিগরি ত্র“টির সম্মুখীন হলে সে সময় অবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ রক্ষা করবে প্রস্তাবিত দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল। নতুন সাবমেরিন ক্যাবল পুরানো সাবমেরিন ক্যাবলের সঙ্গে আন্তঃসংযাগে ব্যবহৃত হবে। আর দুটি ক্যাবলের রুটও হবে ভিন্ন ভিন্ন। এছাড়া নতুন ক্যাবলটিকে এমনভাবে স্থাপন করা হবে যেন একটি কেটে গেলে অন্যটির মাধ্যমে পুরো দেশের তাৎক্ষণিক ব্যবহৃত ব্যান্ডউইথে কোন ঘাটতি না হয়। এটি ব্যাকআপ হিসেবেও কাজ করবে।
ভি-স্যাট আবার বন্ধ  হতে পারে ঃ দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত না হয়েই বাণিজ্যিকভাবে ভি-স্যাট (ভেরি স্মল এপারচার টার্মিনাল) ব্যবহার বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছিল সরকার। শুধু বাংলাদেশে বিদেশি দূতাবাস, আন্তর্জাতিক সংস্থা, ব্যাংক, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি ভি-স্যাট এবং সেনাবাহিনীর জন্যও ভি-স্যাট থাকছে। এগুলো বাদে গত ৩০ জুনের মধ্যে দেশের বাকি সব আইএসপির ভি-স্যাট বন্ধ (সিল) করে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিল বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্র্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। অনেকেই তখন আপত্তি তুলেছিল এর ফলে একমাত্র সাবমেরিন ক্যাবল নেটওয়ার্কটি বিচ্ছিন্ন হলে পুরো দেশ একযোগে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে বহির্বিশ্ব থেকে। ১ জুলাই থেকে এই আদেশ কার্যকর করার কথা থাকলেও বিটিআরসি হঠাৎ করেই জানায়, আগামী ৬ মাস পর্যন্ত ভি-স্যাট ব্যবহারের ওপর কোন নিষেধাজ্ঞা থাকবে না। দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবলে বাংলাদেশ যুক্ত হলে ভি-স্যাট ব্যবহার আবারও বন্ধ করার ঘোষণা দেবে সরকার বলে জানিয়েছে বিটিআরসি সূত্র। প্রসঙ্গত, ভি-স্যাটের বাণিজ্যিক ব্যবহারের বিষয়ে বিটিআরসির ব্যবহারের মাধ্যমে বিশাল অঙ্কের অবৈধ ভিওআইপি কল করা হয়।
 ঘর আলো করার অভিনব পন্থা
বৈদ্যুতিক বাতি নিয়ে ইইউ’র নিষেধাজ্ঞাকে অনায়াসে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার উপায় বের করেছেন জার্মানির একজন প্রকৌশলী৷ নতুন ধরণের মিনি হিটার বিক্রি করছেন তিনি, যা তাপ বাড়ানোর পাশাপাশি ঘরের আলোও বাড়াচ্ছে৷
বিদ্যুত সাশ্রয়ের জন্য ষাট ওয়াটের বেশি শক্তির বৈদ্যুতিক বালব ব্যবহারের উপর ইইউ'এর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে৷ কিন্তু জার্মান ইন্জিনিয়ার সিগফ্রিড রোটহয়জার এবং তাঁর ভগ্নীপতি অবশ্য আরো বেশি ওয়াটের উজ্জ্বল বালব আমদানি ও বিক্রির বৈধ পথ খুঁজে বের করেছেন৷ তাঁরা চীনে তৈরি পঁচাত্তর ও একশ' ওয়াটের লাইট বালব ছোট আকারের হিটিং যন্ত্র হিসেবে আমদানি করছেন এবং সেগুলো ‘হিটবল' নামে বাজারে বিক্রি করছেন৷ এই হিটিং যন্ত্র ঘরকে গরম করার পাশাপাশি আলোও দিচ্ছে৷

জার্মানির এসেন শহরের মেকানিক্যাল ইন্জিনিয়র রোটহয়জার ‘হিট বলস'র বাজারজাত করতে গিয়ে বলছেন, হিটারের মাত্র ৫ শতাংশ শক্তি আলো সৃষ্টিতে সরাসরি ব্যবহার করা হচ্ছে৷ বাকি ৯৫ শতাংশই ব্যবহৃত হচ্ছে তাপ সৃষ্টিতে৷ ‘হিট বল'এর ওয়েব সাইটে বলা হচ্ছে, প্রযুক্তিগত দিক থেকে এটি বৈদ্যুতিক বাতির মতোই৷ পার্থক্য একটাই, এটা আলো সৃষ্টি করার জন্য তৈরি করা হয়নি, তৈরি করা হয়েছে তাপ সৃষ্টির জন্য ৷

এক ইউরো ঊনসত্তর সেন্ট দামে তিনদিনেই বিক্রি হয়েছে চার হাজার হিটবল৷ ওয়েব সাইটে এটাও বলা হচ্ছে, প্রতিটি হিটার বিক্রির অর্থ থেকে ৩০ সেন্ট করে দান করা হবে রেইন ফরেস্ট রক্ষার প্রকল্পে৷

বিদ্যুত সাশ্রয়ের জন্য ইইউ ধীরে ধীরে বেশি ওয়াটের বৈদ্যুতিক বালব বিক্রি উঠিয়ে দিচ্ছে৷ এ ব্যাপারে প্রথম পদক্ষেপ নেওয়া হয় ২০০৯ সালের সেপ্টেম্বরে৷ ২০১২ সালের মধ্যে ষাট ওয়াটের বেশি উজ্জ্বল আলোর বাতিগুলো পুরোপুরি বাজার থেকে উঠিয়ে দিতে চায় ইইউ৷ ২০০৯ সাল থেকেই একশ' ওয়াট এবং এর চেয়ে বেশি ওয়াটের উজ্জ্বল বালব বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া হয়৷
 লবনে আয়োডিন পরিক্ষা
লবন আমাদের জীবনের অতি প্রয়োজনিয় বস্তু। বলনে আয়োডিন থাকে । তবে অনেক লবনে আয়োডিন থাকে না । আয়োডিন ছাড়া লবন খাওয়া উচিত নয়। তবে বাজারের কিছু অসাধু ব্যবসায়ি মিথ্য বলে লবন বেচে।
এ সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজন লবন পরিক্ষা করার।  আমরা ইচ্ছা করলে নিজেই পরিক্ষা করতে পারি। এজন্য তেমন কিছু লাগবে না, শুধু মাত্র এক টুকরো লেবু।
যে ভাবে কাজ করেঃ আমরা জানি এসিড লাল লিটমস কে নীল করে এবং লবনে এসিদ বিদ্যমান ।
পরিক্ষাঃ এক টুকরো তাজা লেবু নিন। যে লবন পরিক্ষা করবেন এক চিমটি লবনের নিন। একটি সাদা কাগজে রাখুন। এবং কয়েক ফোটা লেবুর রস লবনের মধ্যে ঢেলে নিন। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন । যদি লবন নীল রঙ ধারন করে তাহলে বুঝবেন লবনে আয়োডিন আছে। আর যদি না হয় তাহলে এতে আয়োডিন নেই।
 মানব শরীরের কিছু মজার তথ্য
মানুষ হল সৃষ্টির সেরা জীব। কারন আল্লাহ তা’আলা মানুষকে এমনভাবে সৃষ্টি করেছেন যেইভাবে অন্য কোন জীবকে সৃষ্টি করেন নি। মানুষ যখনই তার নিজেকে নিয়ে কোন চিন্তা ভাবনা বা গবেষণা করে তখনই খুজে পায় মানব সৃষ্টির নতুন নতুন বিস্ময়কর অনেক তথ্য। আল্লাহ তা’আলা মানুষকে কত না উত্তমরুপে সৃষ্টি করেছেন যা মানুষ ভাবতেই পারে না। যাই হোক এই পোষ্টটি থেকে আমরা জানবো মানবসম্বন্ধীয় মজার কিছু তথ্য।
Fotolia_4525923_Subscription_L
১. একজন মানুষের রক্তের পরিমাণ তার মোট ওজনের ১৩ ভাগের এক ভাগ। অর্থাৎ ৬৫ কেজি ওজন মানুষের রক্তের পরিমাণ হল ৫ কেজি।
২. দেহে অক্সিজেন সরবরাহকারী লোহিত রক্ত কণিকার পরিমাণ ২৫০০ কোটি এবং এরা ৪ মাস বাঁচে।
৩. রোগ প্রতিরোধকারী শ্বেত রক্ত কণিকার সংখ্যা ২৫০ কোটি এবং এরা মাত্র ১২ ঘন্টা বাঁচে।
৪. দেহের সব শিরাকে পাশাপাশি সাজালে দেড় একর জমির প্রয়োজন হবে।
৫. একজন মানুষের স্নায়ুতন্ত্র এত লম্বা যে তা দিয়ে পৃথিবীকে ৭ বার পেঁচানো যাবে।
৬. কোন অনুভূতি স্নায়ুতন্ত্রের মধ্য দিয়ে ঘন্টায় ২০০ মাইল বেগে প্রবাহিত হয়।
৭. দেহে ও মনে অনুভূতি আসলে তা মস্তিষ্কে পৌঁছতে ০.১ সেকেন্ড সময় লাগে।
৮. একজন শিশুর জন্মের সময় হাড় থাকে ৩৫০ টি।
৯. একজন মানুষ সারা জীবনে ৪০ হাজার লিটার মূত্র ত্যাগ করে।
১০. একজন মানুষের শরীরে চামড়ার পরিমাণ হচ্ছে ২০ বর্গফুট।
১১. একজন মানুষের চামড়ার ওপর রয়েছে ১ কোটি লোমকূপ।
১২. মানুষের শরীরে যে পরিমাণ চর্বি আছে তা দিয়ে ৭ টি বড় জাতের কেক তৈরি সম্ভব।
১৩. মানুষের শরীরে ৬৫০ টি পেশী আছে। কোন কোন কাজে ২০০ টি পেশী সক্রিয় হয়। মুখমন্ডলে ৩০ টির বেশী পেশী আছে। হাসতে গেলে ১৫ টির বেশী পেশী সক্রিয় হয়।
১৪. একস্থান থেকে শুরু করে সমগ্র শরীর ঘুরে ঐ স্থানে ফিরে আসতে একটি রক্ত কণিকা ১,০০,০০০ কিমি পথ অতিক্রম করে অর্থাৎ ২.৫ বার পৃথিবী অতিক্রম করতে পারে।
১৫. আমাদের মস্তিষ্ক প্রায় ১০,০০০ টি বিভিন্ন গন্ধ চিনতে ও মনে রাখতে পারে।

  বিরল প্রজাতির ডাইনোসরের সন্ধান
পৃথিবীতে নানা প্রজাতির ডাইনোসর দেখা যায়। জাতিভেদে এরা বিভিন্ন আকৃতির হয়। এ ডাইনোসর নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে কৌতূহলের অন্ত নেই। বিশেষ করে প্রাণিবিজ্ঞানীদের কাছে কৌতূহলটা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। এবার সন্ধান মিলেছে একেবারে ভিন্ন প্রজাতির ডাইনোসরের। সম্প্রতি মার্কিন মুলুকের উটা অঞ্চলের মরুভূমি খুঁড়ে ৭৬ মিলিয়ন বছর আগের পৃথিবীতে ঘুরে বেড়াত এমন বিরল প্রজাতির ডাইনোসরের সন্ধান পেয়েছেন জীবাশ্মবিদরা। কবি সুকুমার রায় তার একটি ছড়ায় লিখেছিলেন_ 'সিংহের শিং নেই- এই তার কষ্ট। হরিণের সঙ্গে মিলে শিং হল পষ্ট।' হরিণের সঙ্গে মিলেছিল কিনা জানা যায়নি, কিন্তু এ যেন খানিকটা তাই। সম্প্রতি কয়েকজন জীবাশ্মবিদ মার্কিন মুলুকের পশ্চিমাঞ্চলের উটা মরুভূমিতে খুঁড়ে দীর্ঘ শিংঅলা বিরল প্রজাতির ডাইনোসরের সন্ধান পেয়েছেন। এই শিংয়ের ডাইনোসররা নাকি হার্বিভোরাস টাইসেরাটোপ প্রজাতির ডাইনোসরদের নিকটাত্মীয় ছিল। জীবাশ্মবিদরা মাটি খুঁড়ে ডাইনোসরের দুটি করোটি পেয়েছেন। একটি করোটি সাতফুট লম্বা, আরেকটির মাথায় ১৫টি শিং ছিল। এক মাথায় ১৫ শিং নিয়ে কী বিচিত্রই না দেখাত এই প্রাগৈতিহাসিক প্রাণীগুলোকে। গবেষকরা জানিয়েছেন, অতিকায় নিরামিষাশী এই ডাইনোসররা ছিল হারিয়ে যাওয়া প্রাচীন মহাদেশ 'লারামিডিয়ার অধিবাসী। যার অবস্থান ছিল বর্তমান উত্তর আমেরিকার কাছে। খুঁজে পাওয়া এই প্রাগৈতিহাসিক প্রাণীগুলোর একটা নামও তো চাই, তাই নয় কি! গবেষকরা এই দুটি ডাইনোসরের নাম রেখেছেন 'উটা-সেরাটপ'। উটা মরুভূমিতে এদের সন্ধান মিলেছে, কিন্তু গবেষকদের মাথা ব্যথার মূল কারণ হলো_ এই ১৫টি শিং। বিশাল মাথায় বিচিত্রভাবে সাজানো এতগুলো শিং দিয়ে এই 'কসমসেরাটপস রিচার্ডসনিরা আসলে কী করত। এ নিয়ে মহাদ্বন্দ্বে পড়ে গিয়েছেন তারা। অবশ্য কেউ কেউ বলছেন, এই শিংগুলো প্রতিদ্বন্দ্বী আর শত্রুদের ঠেঙ্গাতেই ব্যবহার করত কসমসেরাটপ রিচার্ডসনিরা। কখনো কখনো নাকি প্রেমের ভাব প্রকাশেও এর ব্যবহার ছিল, অন্তত বিজ্ঞানীদের তেমনটিই ধারণা। সেক্ষেত্রে এই বিরল প্রজাতির ডাইনোসরদের বিচিত্র এই শিং সমাহার সমরাস্ত্র এবং প্রেমাস্ত্র, মানে প্রেম প্রকাশের অস্ত্র হিসেবেও ব্যবহার করত এরা। দুই জীবাশ্মের মধ্যে যে ডাইনোসরটি অপেক্ষাকৃত ছোট, সেটির নাম রাখা হয়েছে 'কসমসেরাটপস রিচার্ডসনি'। ল্যাটিন ভাষায় কসমস মানে হচ্ছে বিশদভাবে অলঙ্কৃত। আর গবেষক স্কট রিচার্ডসন একে খুঁজে পেয়েছিলেন বলেই তার নামের রিচার্ডসন-এর সঙ্গে মিলিয়ে রাখা হয়েছে রিচার্ডসনি। আরেক জীবাশ্ম গবেষক মার্ক লোওয়েন জানিয়েছেন, আদতে এই উটা সেরাটপদের মস্ত মাথার বিশালকায় গণ্ডারই বলা যায়। নাকের ওপরে বসানো লম্বা শিংটির কথা বাদ দিলে অন্য শিংগুলো ঊর্ধ্বমুখী না হয়ে তাদের মুখের পাশ দিয়ে বেরিয়ে থাকতো। তিন থেকে চার টন ওজন হতো এদের। ১৮ থেকে ২২ ফুট দৈর্ঘ্যের এসব ডাইনোসর উচ্চতায় ছিল সাত ফুট।

রেলগাড়ির জন্য সবুজ বিদ্যুৎ
পরিবেশ বান্ধব জ্বালানিতে চলছে রেলগাড়ি৷ এই পৃথিবীকে বাঁচাতে, জলবায়ুকে ঠিক রাখতে পরিবেশ বাঁচানোর এই উদ্যোগ জার্মানির রেল সংস্থা ‘ডয়চে বান'এর৷ বগুড়ার আমির হোসেন৷ এক কথায় তাঁকে যদি বলা হয় আবিষ্কারক, তাহলে মোটেই ভুল বলা হবে না৷
তিনি বানিয়েছেন নানা যন্ত্র৷ গ্রামীণ এই বিজ্ঞানী এবার বানালেন পরিবেশবান্ধব ইলেকট্রিক গাড়ি৷ এরই মধ্যে বগুড়া শহরে গাড়িটি চালিয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি৷ গাড়ির নাম রেখেছেন ‘রফ-রফ তাহিয়া' অর্থাৎ সুন্দর ও দ্রুততম যান৷ এই গাড়ি পরিবেশ-সহায়ক, তেল-মোবিল লাগছে না৷ শক্তির ১২ ভোল্টের পাঁচটি চার্জেবল ব্যাটারি আর ৬০ ভোল্ট ডিসি মোটর৷ না, ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে নয়৷ এই গাড়ি তিনি বানালেন কেবল পরিবেশকে বাঁচানোর বিষয়টি চিন্তা করেই৷
গাড়ি থেকে প্রতিদিন প্রচুর কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গত হচ্ছে এই পৃথিবীতে৷ এই  কার্বন ডাইঅক্সাইড বা সিওটু হলো জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম নিয়ামক৷ আর তাই বিশ্বব্যাপী গাড়ি উৎপাদকরা এবার নেমেছেন সিওটু মুক্ত গাড়ি বাজারজাত করার কাজে৷ জার্মানি এগিয়ে যাচ্ছে এই কাজে৷
 সম্প্রতি জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ২০২০ সালের মধ্যে জার্মানির রাস্তায় অন্তত ১ লাখ বিদ্যুৎচালিত গাড়ি দেখতে চান বলে উল্লেখ করেছেন৷  আর এই কথার পরপরই গাড়ি নির্মাতা কোম্পানিগুলো উঠেপড়ে লেগেছে ‘সবুজ গাড়ি' বানানোর কাজে৷ ইতিমধ্যে বাজারজাতও হতে শুরু করেছে পরিবেশ সম্মত গাড়ি৷ প্রায়ই রাস্তায় দেখা মিলছে আউডি কোম্পানির নতুন সবুজ গাড়ি নিয়ে ছুটে যাচ্ছে কোন ট্রাক৷
কিন্তু কেবল কি প্রাইভেট কার বা অটোর জ্বালানি ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনলেই হবে? আর কোন পরিবর্তন আসবে না? জার্মানির একটি রেললাইন ধরে ছুটে চলে লোকোমেটিভ ইঞ্জিন আর সঙ্গে অসংখ্য বগি৷ মূলত বিদ্যুৎ চালিত এখনকার রেলগাড়ি৷ 
ডয়চে বান৷ জার্মানির জাতীয় রেল সংস্থা৷ কেবল জার্মানিতেই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কাজ করছে এই সংস্থা৷ তারা এগিয়ে এসেছে ক্ষতিকর গ্যাস থেকে এই বিশ্বকে বাঁচাতে৷ নতুন এক প্রকল্প গ্রহণ করেছেন তারা৷ নাম ইকো প্লাস৷ এই প্রকল্পের আওতায় ধীরে ধীরে সকল রেল ইঞ্জিনকে রূপান্তর করা হবে সবুজ জ্বালানি নির্ভর করে৷ এই কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয় গেছে৷ জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র
সনটা ২০০৮৷ তখনই তারা সিদ্ধান্ত নেয় পরিবেশ সম্মত রেলগাড়ি চালানোর৷ এই কার্যসূচি গ্রহণ করার পর ১৯৯০ সালের তুলনায় এখন তারা শতকরা  ৪০ ভাগ কার্বন নিঃসরণ কমিয়েছে৷ নতুন করে পরিকল্পনার শাখা প্রশাখা বিস্তার করে বলেছে, আরও ২০ ভাগ কমানোর লক্ষ্যে কাজ চলছে৷ আর ২০২০ সাল নাগাদ তাদের যানবাহন থেকে এই গ্যাস নিঃসরণের মাত্রা কমিয়ে আনা হবে একেবারে শূন্যের কোটায়৷ যেমনটা জানালেন এই প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ শাখার কন্সটানটিন ফোগট৷ বললেন, ‘আমাদের বেশিরভাগ যান চলে বিদ্যুতে৷ এক কথায় শতকরা ৯৫ ভাগ৷ আমরা যা করছি তা হলো সনাতনী বিদ্যুr  উৎপাদন ব্যবস্থা থেকে সরে আসা৷ আমরা নিচ্ছি নবায়নযোগ্য জ্বালানি৷ সেই পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ আমরা দিচ্ছি আমাদের যানবাহনে৷ এক কথায় সেগুলো চলছে সবুজ বিদ্যুতে৷'
এ ক্ষেত্রে ডয়চে বান জলবিদ্যুৎ এর উপর নির্ভরশীল হচ্ছে৷ এখন তারা নিজেরাই নতুন নতুন এ ধরনের বিদ্যুৎ কেন্দ্র বানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ এছাড়া অন্য যাদের কাছ থেকে তারা বিদ্যুৎ কিনছে, জানিয়ে দিয়েছে, তাদেরকে বিদ্যুৎ দিতে হলে সবুজ বিদ্যুতই দিতে হবে৷ এক্ষেত্রে বায়ু বিদ্যুৎ এর প্রতিও রয়েছে তাদের আগ্রহ৷ ইতিমধ্যে এই প্রতিষ্ঠান একটি বৃহৎ বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র কিনেও নিয়েছে৷ যা চলছে বেশ৷
কন্সটানটিন ফোগট এবং তাঁর  প্রতিষ্ঠানের কথা স্পষ্ট, ‘আমরা আমাদের সিদ্ধান্ত অবিচল৷ আমাদের অবস্থান পরিষ্কার৷ আমাদের সঙ্গে ভ্রমণ এবং পরিবহণ হবে ক্ষতিকর কার্বন গ্যাস মুক্ত৷'
প্রতিবেদন: সাগর সরওয়ার
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন

পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে মেদ কমানোর জন্য




শুধু খাদ্যসংযমী হলেই মেদ কমে না, সেক্ষেত্রে রাতে পর্যাপ্ত ঘুমও জরুরি। যুক্তরাষ্ট্রে সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণায় একথাই বলা হয়েছে।

নতুন এ গবেষণাটি 'অ্যানালস অব ইন্টারনাল মেডিসিন' এ প্রকাশিত হয়েছে। ওজন নিয়ন্ত্রণে ঘুমের ভূমিকা রয়েছে বলে এ গবেষণায় প্রমাণ পাওয়া গেছে।

তাই যেসব মানুষ ওজন কমানোর পরিকল্পনা করছেন তাদের রাতের ঘুম নিশ্চিত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

অতিরিক্ত ওজনের ১০ জন পুরুষ ও নারীকে নিয়ে এ গবেষণা চালানো হয়। গবেষণার প্রয়োজনে এদের দুই সপ্তাহ দুটি পৃথক ঘুমানোর স্থানে রাখা হয়।

এ সময় তাদের একই রকম খাদ্য দেওয়া হলেও প্রথম পর্যায়ে তাদের প্রতি রাতে সাড়ে আট ঘণ্টা করে এবং অন্যদের সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা করে ঘুমাতে দেওয়া হয়।

গবেষকরা দেখতে পান সাড়ে আট ঘণ্টা ঘুমানোর সময় উভয় দলই ৭ পাউন্ডের একটু কম করে ওজন হারিয়েছে। অপর দিকে সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা ঘুমানোর সময় তাদের পেশি কমেছে কিন্তু চর্বি কমেনি। শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা নতুন এ গবেষণাটি করেছেন। 
এই প্রথম বিজ্ঞানীরা প্রাণের বসবাস-উপযোগী একটি গ্রহের সন্ধান পেয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া সান্তা ক্রুজ ও কার্নিজি ইনস্টিটিউশন অব ওয়াশিংটনের একদল গ্রহসন্ধানী জ্যোতির্বিদ গত বুধবার রাতে এ ঘোষণা দেন। তাঁরা জানিয়েছেন, সৌরজগতের বাইরে 'গি্লজ ৫৮১' নামের তারা ঘিরে আবর্তিত হচ্ছে গ্রহটি। নতুন আবিষ্কৃত এ গ্রহ খুব গরম নয়, খুব ঠাণ্ডাও নয়। গ্রহটির অন্যান্য ভৌত-বৈশিষ্ট্যও প্রাণের অস্তিত্বের জন্য খুবই অনুকূল।
সদ্য আবিষ্কৃত গ্রহটি মহাকাশের বিভিন্ন নক্ষত্রজগতের দূরত্বের তুলনায় পৃথিবী থেকে যথেষ্ট কাছেই অবস্থান করছে। পৃথিবী থেকে এর দূরত্ব প্রায় ২০ আলোকবর্ষ (এক আলোকবর্ষ সমান প্রায় ৯ লাখ ৪৬ হাজার কোটি কিলোমিটার)। অর্থাৎ আমরা যদি পৃথিবী থেকে এমন একটি নভোযানে চড়ি, যার গতিবেগ আলোর গতির ১০ ভাগের এক ভাগ, তবে নতুন এ গ্রহে পেঁৗছাতে প্রায় ২০০ বছর সময় লাগবে।
এ পর্যন্ত গি্লজ ৫৮১ নক্ষত্রের ছয়টি গ্রহ আবিষ্কৃত হয়েছে। এর ভেতরে দুটি গ্রহ কয়েক বছর আগেই আবিষ্কার করা হয়েছিল, যার একটি ছিল যথেষ্ট উষ্ণ; অন্যটি খুব বেশি শীতল। সদ্য আবিষ্কৃত গ্রহটি আগের দুটি গ্রহের মাঝামাঝি অবস্থানে রয়েছে। অবস্থান হিসেবে এর নাম দেওয়া হয়েছে 'গি্লজ ৫৮১-জি'।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, পৃথিবীর তুলনায় গ্রহটির 'ব্যাসার্ধ' ১ দশমিক ২ থেকে ১ দশমিক ৪ গুণ বেশি। 'ভর' বেশি ৩ দশমিক ১ থেকে ৪ দশমিক ৩ গুণ। তবে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি পৃথিবীর প্রায় সমান অথবা সামান্য বেশি। ফলে পৃথিবীর মানুষ এতে অনায়াসেই হাঁটাহাঁটি করতে পারে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যের তুলনাও পৃথিবীর যথেষ্ট কাছাকাছি। গ্রহটির উপরিভাগের গড় তাপমাত্রা অবশ্য পৃথিবীর তুলনায় একটু বেশি শীতল_সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হিমাঙ্কের চেয়ে ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াস নিচে এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হিমাঙ্কের চেয়ে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস নিচে। তবে এ তাপমাত্রায়ও প্রাণের অস্তিত্ব ভালোমতোই টিকে থাকা সম্ভব বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
গ্রহটির 'সূর্য' অর্থাৎ আলোর উৎস (গি্লজ ৫৮১) একটি লাল বামন নক্ষত্র। সূর্য এর চেয়ে আকারে প্রায় তিন গুণ বড় এবং তাপমাত্রায় প্রায় ৫০ গুণ বেশি উষ্ণ। সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব প্রায় সাড়ে ৯ কোটি মাইল। সে হিসাবে আবিষ্কৃত গ্রহটি তার আলোর উৎস থেকে অনেক কাছে_মাত্র দেড় কোটি মাইল। এর সূর্যের চারপাশে একবার ঘুরে আসতে গ্রহটির সময় লাগে মাত্র ৩৭ দিন, যেখানে পৃথিবীর লাগে ৩৬৫ দিন। বিজ্ঞানীরা আরো বলেছেন, তরল পানি, পাথুরে স্থলভাগ ও একটি সমৃদ্ধ বায়ুমণ্ডল রয়েছে গ্রহটির।
সব মিলিয়ে গ্রহটিকে পৃথিবীর প্রাণীর জন্য চমৎকার আবাসযোগ্য গ্রহ হিসেবে বিবেচনা করছেন সান্তা ক্রুজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক স্টিভেন ভোত। গ্রহটির একটি অংশ সব সময় এর সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে, বিপরীত অংশ থাকে অন্ধকারে। গ্রহটির আলো-আঁধারের মধ্যবর্তী অঞ্চলটি প্রাণের বসবাসের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত বলে মনে করেন অধ্যাপক স্টিভেন। এক বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, 'আমরা এত দ্রুত পৃথিবীর এত কাছাকাছি গ্রহটির সন্ধান পেয়েছি যে এটি এ ধরনের আরো গ্রহ আবিষ্কারের ব্যাপারে আমাদের আশাবাদী করে তুলেছে।'
আলোকরশ্মির গতির পরোক্ষ পদ্ধতির (ইনডাইরেক্ট মেথড রেডিয়াল ভেলোসিটি) মাধ্যমে কেক-১ টেলিস্কোপ দিয়ে গ্রহটি আবিষ্কার করা হয়েছে। এ জন্য বিজ্ঞানীদের ১১ বছর অনুসন্ধান চালাতে হয়েছে।
প্রাণের বসবাসের উপযুক্ত কোনো গ্রহের অস্তিত্ব কল্পবিজ্ঞানের মতো। প্রাণের আবাসযোগ্য পরিবেশের জন্য চাই এমন সব জটিল শর্তের সমন্বয়, যার অনেক কিছুর মেলার পরও অঙ্কের চূড়ান্ত ফলাফলে অনিশ্চয়তা থেকে যায় অনেক। অতীতে সৌরজগতের বাইরে বিভিন্ন সময় প্রায় ৫০০ ছোট-বড় গ্রহের সন্ধান মিলেছে। তবে সেগুলো প্রাণের বসবাস-উপযোগী ছিল না। তবে নতুন আবিষ্কৃত গ্রহটির ক্ষেত্রে এখনো অনেক প্রশ্নের উত্তর অজানা রয়ে গেছে। সূত্র : এপি, নাসা, টেলিগ্রাফ, ডেইলি মেইল।

অ্যাপোলো-১১-এর না-জানা ১০

অ্যাপোলো-১১ অভিযানের ৪০ বছর পর চন্দ্রাভিযানের খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে মার্কিন লেখক ক্রেইগ নেলসনের লেখা রকেটম্যান নামের বইটি বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। এ বইয়ে ৪০ বছরের পুরোনো চন্দ্রাভিযানের ঘটনা নিয়ে লেখক এমন কিছু নতুন কথা বলেছেন, যেগুলো অনেকটাই অপ্রকাশিত ছিল এত দিন। এমনই ১০টি না-জানা কথা তুলে ধরা হলো এখানে:
১. উড্ডয়নের সময় অ্যাপোলো-১১-এর রকেটে এত বিপুল পরিমাণ জ্বালানি ছিল যে কোনো বিস্ফোরণ ঘটলে ১০০ পাউন্ডের কোনো বস্তুকে এটি অন্তত তিন মাইল দূরে ফেলতে পারত। উড্ডয়নের সময় বিস্ফোরণের মতো ঘটনা ঘটতে পারে বলে ভাবতে পারেনি নাসা, তাই কোনো প্রস্তুতিও ছিল না। সে জন্য তখন রকেটের উড্ডয়নস্থল থেকে সাড়ে তিন মাইল দূূরে থাকা ভিআইপি অতিথিরাও নিরাপদে ছিলেন না।
২. অ্যাপোলো-১১-এর কম্পিউটারের প্রসেসরের ক্ষমতা এখনকার যেকোনো মোবাইলফোনের চেয়ে কম ছিল।
৩. চন্দ্রযানের ভেতর অভিযাত্রীদের জন্য পানীয় জলের উত্স হিসেবে ছিল সেখান থেকে উত্পন্ন বাই-প্রোডাক্ট পানি। কিন্তু শূন্য ত্বরণে গিয়ে এর হাইড্রোজেন পরিশোধকটি কাজ করছিল না। তাই চন্দ্রাভিযাত্রীদের হাইড্রোজেন বুদ্বুদ্সহ পানিই খেতে হয়েছে; ফলে অভিযাত্রীদের সবাইকে পেটের পীড়ায় ভুগতে হয়েছে।
৪. ইগল যখন চাঁদে অবতরণের জন্য এর মূল কক্ষপথ থেকে আলাদা হয়, তখন এটি পূর্ণ চাপশূন্য ছিল না। ফলে সেখানে গ্যাসীয় বিস্ফোরণ হয় এবং চন্দ্রপৃষ্ঠে লক্ষ্যস্থলের চেয়ে অন্তত চার মাইল দূরে গিয়ে নামে এটি।
৫. নিল আর্মস্ট্রং যখন ইগলকে চন্দ্রপৃষ্ঠে নামান, তখন প্রায় জ্বালানিশূন্য ছিল এটি। অল্পের জন্য বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায় ইগল।
৬. চাঁদে মানুষের প্রথম পা পড়ার ঘটনাকে বলা হয়ে থাকে ‘মানুষের জন্য ছোট্ট এক ধাপ’। কিন্তু সেই ধাপটি এত ছোট ছিল না। ইগল থেকে নামতে অভিযাত্রীদের প্রথম ধাপে লাফিয়ে ৩ দশমিক ৫ ফুট পার হতে হয়েছে।
৭. আর্মস্ট্রংয়ের পর ইগল থেকে যখন অলড্রিন নামলেন চাঁদের বুকে, তখন ইগলের দরজা খোলা ছিল। কারণ, এই চন্দ্রযানের দরজার বাইরের দিকে কোনো হাতল ছিল না; ফলে দরজা খোলা রেখেই নামতে হয়েছে তাঁদের।
৮. অভিযানের সময় অভিযাত্রীদের সবচেয়ে কঠিন কাজ ছিল কোনটি? চাঁদের বুকে পতাকা ওড়ানো। নাসার বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল, চাঁদের মাটি বেশ নরম, ফলে পতাকার দণ্ড পুঁততে সমস্যা হবে না। কিন্তু সেখানে গিয়ে তাঁরা শক্ত পাথুরে আবরণের ওপর পাতলা বালির মধ্যে পতাকার দণ্ড দাঁড় করাতে পারছিলেন না। শেষ পর্যন্ত খুব কসরত করে পতাকার দণ্ডটি ভিডিও করার জন্য কিছুক্ষণের জন্য দাঁড় করাতে পেরেছিলেন তাঁরা।
৯. যে পতাকাটি চাঁদে ওড়ানো হয়, বেশ যত্ন করে সেটির ডিজাইন করা হয়। অনেক গবেষণার পর নাসা সেটিকে অনুমোদন দেয়নি শুরুতে।
১০. চন্দ্রযানের ভিতরাবরণ, বায়ুনিরোধক আবরণ এবং কম্পিউটারের রমের মতো স্পর্শকাতর জিনিস কোনো স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থায় তৈরি হয়নি। এগুলো খালি হাতে তৈরি করে ছোট মেয়েদের একটি দল।

মাছও মায়ের দুধ পান করে!
সম্প্রতি ডেনমার্কের গবেষকরা দুর্লভ প্রজাতির মাছের সন্ধান পেয়েছেন যেগুলোর মা মাছ তার পোনাদের দুধ পান করায়। আর ভ্রুণ অবস্থায় মা মাছের পেটের ভিতর থাকাকালে এই দুধ পানের ঘটনা ঘটে। খবর বিবিসি অনলাইনের।

সংবাদমাধ্যমটির বরাতে জানা গেছে, স্তন্যপায়ী এই মাছগুলো পোনাদের দুধ পান করানোর মাধ্যমে পুষ্টির যোগান দেয়। আর এই দুগ্ধ তৈরি হয় মাছের ম্যামারি গ্ল্যান্ডে।

সংবাদমাধ্যমটির বরাতে জানা গেছে, মাছের ক্ষেত্রে বাচ্চাদের দুধ পান করানোর ঘটনা এর আগে জানা যায়নি।

কোপেনহেগেন ইউনিভার্সিটির গবেষকরা ইলপাউট নামের এই দুর্লভ মাছের সন্ধান পেয়েছেন। মাছটির বৈজ্ঞানিক নাম Zoarces viviparus

গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে এক্সপেরিমেন্টাল মেরিন বায়োলজি অ্যান্ড ইকোলজি সাময়িকীতে।

গবেষকরা জানিয়েছেন, ইলপাউট মা মাছ একসঙ্গে ৩০ থেকে ৪০০ বাচ্চা জন্ম দিতে পারে। আর জন্মের সময় বাচ্চাগুলোর আকার হয় ৩ থেকে ৫ ইঞ্চি পর্যন্ত।

জানা গেছে, এই মাছ ইংলিশ চ্যানেল থেকে বাল্টিক সাগর এবং হোয়াইট সি এর তীরবর্তী  এলাকায় বেশি দেখা যায়।

গবেষকরা জানিয়েছেন, ইলপাউট মাছের গর্ভধারণকাল অনেক দীর্ঘ হয়। ৬ মাসের দীর্ঘ সময় গর্ভধারণ করার পর শীতকালে বরফশীতল পানিতে বাচ্চা জন্ম দেয় মা মাছ। স্তন্যপায়ী অন্যান্য প্রাণীদের মতোই মাতৃগর্ভে ডিম্বানু জন্ম হয় এবং বেড়ে ওঠে। আর নিষিক্তকরণ বা সন্তান জন্মের অন্যান্য সব পর্যায় ওভারিতে ঘটে থাকে। আর এই ওভারিতেই থাকে ফলিকলস। প্রতিটি পোনার জন্য আলাদা ফলিকস থাকে। আর প্রতিটি ফলিকলস এর মাধ্যমে পোনাদের মুখে পৌঁছে যায় মায়ের দুধ।

মহাকাশে হোটেল নির্মাণ করবে রাশিয়া
মহাকাশে প্রথম হোটেল নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে রাশিয়া। মস্কোর ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনে'র (আইএসএস) নেতৃত্বস্থানীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন এক নির্বাহী কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার একথা জানিয়েছেন।

এনার্জিয়া কোম্পানির উপ-প্রধান ডিজাইনার অ্যালেকজান্ডার দেরেচিন বলেছেন, তারা একটি বেসরকারি মহাকাশ স্টেশন নির্মাণের জন্য বিনিয়োগকারী চায়। ওই স্টেশনে ৭ জন থাকতে পারবে এবং এতে হোটেলের মত সেবা দেওয়া হবে।

দেরেচিন রয়টার্সকে আরো জানায়, "বিশ্ব জুড়ে বাণিজ্যিক মহাকাশযান তৈরি হচ্ছে। এতে করে তাদের কোথাও না কোথাও যাওয়ার প্রয়োজন পড়বে।"

অরবিটাল টেকনোলজির সঙ্গে যৌথভাবে এনার্জিয়া এ কার্যক্রম শুরু করবে।

অরবিটাল এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, হোটেলটিতে বৈজ্ঞানিক গবেষণা, মিডিয়া প্রজেক্ট এবং বিনোদনের সুবিধা থাকবে।

এয়াড়া, এটি নভোচারীবাহী রাশিয়ার সয়ুজ নভোযানের বিরতিস্থল হিসেবেও ব্যবহার করা যাবে। 


ইরানের পারমানবিক শক্তি কেন্দ্রে সাইবার হামলা

সম্প্রতি ইরানের বাশার পারমানবিক শক্তি কেন্দ্রের কম্পিউটাগুলোতে ম্যালওয়্যার আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। ইরান একে সাইবার আক্রমণ বলে দাবী করছে। এই সাইবার আক্রমণ প্রতিরোধের চেষ্টা করছে দেশটি । খবর টাইমস অফ ইন্ডিয়ার।

পারমানবিক কেন্দ্রের প্রধান মাহমুদ জাফরির বরাতে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, বাশার পারমানবিক শক্তি কেন্দ্রের কম্পিউটারে এক ধরনের জটিল ওয়ার্ম আক্রমণ করেছে । তবে এই সাইবার আক্রমনে মূল শক্তি কেন্দ্রের বিশেষ কোনো ক্ষতি হয়নি।

তিনি জানিয়েছেন, ইরানি বিশেষজ্ঞদের তদন্তে দেখা গেছে, প্রকল্পে কাজ করা কিছু কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত সফটওয়্যারে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। এখন এই ভাইরাস শনাক্ত করে প্রতিরোধের চেষ্টা চলছে।

এই সাইবার আক্রমনে পারমানবিক শক্তি কেন্দ্রের উৎপাদনে কোনো প্রভাব পড়বে না বলেও তিনি জানিয়েছেন।

সংবাদমাধ্যমটির বরাতে জানা গেছে, ৩০ হাজার কম্পিউটারের ছড়িয়ে পড়েছে ভাইরাসটি। এই ভাইরাসটি নাম ‘স্ট্যাক্সনেট’।

সিমেনটেক কর্পোরেশনের তথ্য থেকে দেখা গেছে, এই ম্যালওয়্যারটির মোট আক্রমণের ৬০ ভাগই ঘটে ইরানকে ঘিরে।

ইরানের ইনফরমেশন টেকনোলজি কাউন্সিল অফ দ্যা মিনিস্ট্রি অফ ইন্ড্রাস্ট্রিজ অ্যান্ড মাইনস এর পরিচালক মাহমুদ রিয়াহি জানিয়েছেন, ইরানের বিরুদ্ধে ইলেকট্রনিক যুদ্ধ চালানো হচ্ছে। আর ইরানের পরমানু গবেষণার তথ্য হাতিয়ে নিতে এই ম্যালওয়্যার আক্রমণ করা হয়েছে


বরফ কেন পানিতে ভাসে?
এটা আমরা সবাই জানি যে, বরফ পানিতে ভাসে। যত বড় বরফের চাকা হোক না কেন, পানিতে ডুবে যাবে না। বরফের পাহাড় পর্যন্ত পানিতে ভেসে থাকে। আপনি কি জানেন বরফ কেন পানিতে ভাসে? গ্রিক বৈজ্ঞানিক আর্কিমেডিস প্রথম জানতে পারেন, পানিতে একটা বস্তু কি করে ভাসে। এর নিয়মটা হলো, একটা বস্তু পানিতে ফেললে তার ওপর দুটো পরস্পর বিরুদ্ধ শক্তি কাজ করে। একটি হলো বস্তুটির নিজের ওজন তাকে তলিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ দেয়। অন্যদিকে পানি তাকে ধাক্কা দিয়ে উপরের দিকে ঠেলতে থাকে। এখন বস্তুটির ওজন যদি পানির চাপের সমান হয় বা হালকা হয়, তাহলে তা ভেসে থাকবে, ডুববে না। পানির চাপের সমান হওয়া মানে হলো, কত ওজনের পানি বস্তুটির পানিতে পড়ার পর সরে গিয়ে তাকে জায়গা করে দিচ্ছে। আর যদি বস্তুটির ওজন ওই স্থানচ্যুত পানির ওজনের চেয়ে বেশি হয়, তাহলে সেটা টুপ করে ডুবে যাবে। তাহলে কথা হলো, একটি বস্তুর ওজনের পানি যদি সরে গিয়ে জায়গা করে দেয় তাহলে বস্তুটি ভেসে থাকবে। এক টুকরা কাঠ যে পানিতে ভেসে থাকে তার কারণ হলো তার নিজের ওজন যে পরিমাণ পানি সরে গেছে তার ওজনের চেয়ে কম। এক টুকরা কাঠের ওজন যে পরিমাণ পানি স্থানচ্যুত হচ্ছে তার ওজনের ঠিক অর্ধেক। তাই তার অর্ধেক থাকে পানির তলায় আর বাকি অর্ধেক থাকে পানির উপরে। ঠিক একই নিয়মে এক টুকরা কর্কের ওজন স্থানচ্যুত পানির ওজনের মাত্র পাঁচ ভাগের একভাগ, তাই কর্কটির এক-পঞ্চমাংশ জলে ডুবে থাকে। এ নিয়মটি বুঝতে পারলেই বোঝা যাবে যে বরফ জলে ভাসে কেন। সাধারণ নিয়মে কোনো তরল বস্তুর শক্ত বা ঘন হয়ে ওঠার মানে হলো তার অণুকণাদের খুব কাছাকাছি চলে আসা। এর ফলে বস্তুটির আয়তন যায় কমে, মানে ঘনত্ব বেড়ে যায়। সোজা কথায় একটি বস্তু জমে কঠিন হলে তার ওজন তরল অবস্থার চেয়ে বেশি হয়। তবে পানি হলো এমন এক মজার তরল পদার্থ যে, জমে বরফ হওয়ার পর আকারে ছোট না হয়ে বরং আরো ছড়িয়ে পড়ে। পানির তুলনায় বরফের আয়তন আকারে আরো বেড়ে ওজন দাঁড়ায় পানির ওজনের ১০ ভাগের ৯ ভাগ। তাহলে ৯ লিটার পানি জমিয়ে বরফ করলে তার আয়তন ১০ লিটারের মতো হবে। আমরা জানি যে, লিটার পানির ওজনের মাপ নয়, এটা হলো আয়তনের মাপ। তাহলে বরফের আয়তন বেড়ে যাওয়ায় এর ঘনত্ব দাঁড়াচ্ছে পানির ঘনত্বের ১০ ভাগের ৯ ভাগ মাত্র, যার মানে হলো এর ওজন পানির চেয়ে হাল্কা। এ জন্যই বরফের নয়-দশমাংশ পানিতে তলিয়ে থাকে আর ভাসে এক-দশমাংশ। তাহলে দেখা যাচ্ছে, বরফের যে অংশ পানির তলায় রয়েছে, অর্থাৎ নয়-দশমাংশ, আর তাতে যে পরিমাণ পানি স্থানচ্যুত হচ্ছে তাহলো পুরো বরফের ওজনের সমান। ফলে বরফের এক-দশমাংশ পানিতে ভেসে থাকছে। ভেসে থাকার এই নিয়মকে বলা হয় আর্কিমিডিসের তত্ত্ব। এ থেকে বোঝা যায়, বিরাট হিমপাহাড়ের বেশিরভাগ অংশ কেন পানিতে ডুবে থাকলেও তার এক-দশমাংশ পানির উপর ভেসে থাকে। খুব ঠাণ্ডা এলাকায় অনেক সময় কলের পানির পাইপ ফেটে যায়। তার কারণ হলো পানি জমে বরফ হওয়ায় তার আয়তন পাইপের আয়তন অপেক্ষায় বেশি হয়। আর তার চাপেই পাইপ ফাটে। ফিনল্যান্ডে পাহাড় ভাঙার কাজে এ নীতি কাজে লাগানো হয়। পাথরের মাঝে একটু খালি জায়গা পেলে সে জায়গায় পানি ভরে রাখা হয়। তারপর যখন বরফ জমার দিন আসে তখন পানির আয়তন বেড়ে প্রচণ্ড চাপ পড়ে চারপাশের পাথরের উপর তা ফাটিয়ে দেয়।